পোস্টগুলি

জন্ম(যন্ত্রণা)দাতা

 আজ পরীক্ষার হলে ম্যাম আমার পাশে দাঁড়ালেন। কিছুক্ষণ আমার খাতায় তাকিয়ে বললেন, 'তোমার হাতের লেখা তো অনেক সুন্দর। মাশাল্লাহ! ' একথা শোনার পর থেকে পুরোটা সময় মন খারাপ করে পরীক্ষা দিয়েছি। ম্যামকে বলতে ইচ্ছে হচ্ছিলো- 'ম্যাম, আপনি তো আমার হাতের লেখাটা দেখলেন, এর পেছনের সত্য গল্পটা জানলেন না!' " আমার শিশুকালের কথা। আমার বাবা আমাকে হাতের লেখা শেখাতেন লাঠি নিয়ে বসে। আমি ছোট্ট মানুষ!  ভয়ে কেঁপে কেঁপে লিখতাম। লেখা শেষে তিনি স্কেল দিয়ে মেপে মেপে দেখতেন সোজা হয়েছে কি-না।  একটু এদিক-সেদিক হলেই মারতেন, বকতেন, অপমান করতেন, খাবার বন্ধ করতেন! তিনি আমাকে বড় করতে চেয়েছেন একজন সেনাসদস্যের মতো করে!  ভোরবেলায় ঘুম থেকে ওঠা, শরীরচর্চা করা, পড়া, গোসল এবং খাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া।  তিনি আমার মধ্যে নিজের কার্বনকপি রেখে যেতে চেয়েছেন।   এজন্য আমার শৈশবটা নষ্ট করেছেন যেন হুবহু তার লেখার মতো আমার হাতের লেখা হয়।  হয়েছেও তাই। আমরা দু'জনবাদে কেউই আলাদা করে ধরতে পারে না। তিনি ভালো বাবা হওয়ার জন্য অধ্যবসায় করতেন। ভাবতেন আমার সাথে যা করছেন সবই আমার ভালোর জন্য। হোক কঠিন শাস্তি তবুও ত...
তাজমহল- তোমার কাছে এই তাজমহল ভালোবাসার প্রতীক হতে পারে এমনকি তাজমহলের পুরো উপত্যকা তোমার কাছে সম্মানীয় ও পবিত্র বলে বিবেচিত হতে পারে, সেটা ঠিক আছে।  তবুও  আমাদের সাক্ষাৎ অন্য কোথাও হোক। রাজসভায় গরীবের উপস্থিতি হাস্যকর! যে রাজকীয় পথ গরীব প্রেমিকদের উপহাস করে সে পথে কি আমার যাওয়া ঠিক হবে? ভালোবাসার নিদর্শনের আড়ালে থাকা দাম্ভিকতার দিকে লক্ষ্য করো, রাজকীয় কবর কি তোমাকে আনন্দ দেয়? তবে তোমার অন্ধকার ঘরে তাকাও। এই পৃথিবীতে অগণিত মানুষ ভালোবেসেছে। কে বলে তাদের ভালোবাসা খাঁটি ছিলো না? তাদের কেবল ভালোবাসাকে মানুষের সামনে এমন  প্রদর্শনী করার মতো সম্পদ ছিলো না।  কারণ তারা আমাদের মতোই চরম গরীব! এই মহল, এই সমাধি, এই দূর্গ স্বৈরাচারের মহিমার স্তম্ভ। এই তাজমহলটা একটা নকশীকাঁথার মতো  যার প্রতিটা সেলাইয়ে লেগে আছে আমাদের পূর্বপুরুষের রক্ত। যারা নিজেরাও ভালোবেসেছিলো। কিন্তু তাঁদের প্রেমিকাদের কবরে নাম লেখা তো দূরের কথা একটা মোমবাতিও জ্বালানো হয়নি! এই নদীর তীরের যে বাগান, বাঁকা নকশার দরজা, দেয়াল, খিলান, সিন্ধুক এগুলো আসলে কী? এগুলো আসলে এক সম্রাটের সম্পদের জোরে গড়া গরীব প্রেমিকদের প...
ছবি
 
ছবি
ময়লার গাড়ি টানা শিশুদের কথা ভেবে যদি আমরা জন্মদানের বিরোধিতা করি তবে পরোক্ষভাবে ওই কথাটিকেই সমর্থন করছি যে, জন্ম দেওয়ার অধিকার কেবল ধনীদেরই থাকবে! জন্ম দেওয়ার অপরাধে প্রথম যে ব্যক্তি মা-বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তিনি রাফায়েল সামুয়েল৷ তিনিও একটি ভিডিওতে পরোক্ষভাবে বলেছিলেন, যদি সন্তানের জীবদ্দশায় মা-বাবা সন্তানদের সমস্ত ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয় তবে জন্ম দেওয়া ঠিক আছে!  উপরের এই দুটো কথাকে যদি আমরা সমর্থন না করি তবে ময়লার গাড়ি টানা ছেলেকে জন্ম দেওয়া যেমন তার মা-বাবার অপরাধ, ঠিক একইভাবে অপরপাশ দিয়ে হেঁটে চলা স্কুলগামী শিশুদেরও জন্ম দেওয়া তার মা-বাবার অপরাধ। জন্ম দেওয়ার বিরোধীতা করতে যেয়ে আমরা প্রায়শই এই ভুলটা করে থাকি যে, আপাতদৃষ্টিতে সবথেকে খারাপ অবস্থায় থাকা শিশুটির উদাহরণ টানি। কিন্তু ওই স্কুলগামী শিশুরাও তো চায়নি এই বাঁধা-ধরা একসেট নিয়ম। অর্থাৎ, আপাতদৃষ্টিতে আমাদের আশেপাশে সবচেয়ে ভালো আছে যে মানুষটি সে মানুষটিও নানান প্রতিকূলতায় জীবন পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছে! তিনিও প্রায়শই মুক্তির উপায় খোঁজে! এবং কখনো কখনো ভাবে, আমি জন্ম না নিলে কীই বা হতো!

#Antinatalism

ছবি
"আমার সবসময় এমন যুক্তি ছিলো যে,  প্রকৃতির একটি মহা পরিকল্পনা আছে যা প্রতিটি প্রজাতিকে বংশবৃদ্ধির দিকে ঠেলে দেয় এবং প্রকৃতির এই স্বেচ্ছাচারিতাকে অস্বীকার করা যুক্তিবাদী মানুষ হিসেবে এটা আমাদের অধিকার এমনকি বাধ্যবাধকতাও। প্রকৃতি নিজেই গণহত্যাকারী, নিষ্ঠুর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে হাজার হাজার প্রাণী হত্যার মাধ্যমে একজনকে বাঁচিয়ে রাখে।" মূল- Camille Paglia    

রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম ভাবানুবাদ

ছবি
যেহেতু দুঃখের এই দুনিয়ায় যন্ত্রণা সবাই পায়, সেহেতু সুখী তারা পৃথিবীতে আসেনি যারা! এরপর সুখী তারা এসেই দেরি না করে চলে যায় যারা! 'অস্তিত্বহীনতার শান্তি' বইটি বিনামূল্যে পড়তে-  অথবা অথবা অথবা অথবা