ঈশ্বরের সাথে বিদ্রোহ

জন্মদানবিরোধ ১

বাবার সাথে ঈশ্বরের (ধর্মগ্রন্থগুলোর কল্পিত ঈশ্বর) বড় মিলটা হলো -

ঈশ্বর আমাদের (আমরা না চাইতেই, নিজের খেয়াল খুশিমত) সৃষ্টি করে নিজেকে বিশাল কিছু ভাবে। তেমনি বাবারাও জন্ম দিয়ে ভাবে, কী একটা মহিমান্বিত কাজ করে ফেলেছে!

"এরচেয়ে ভালো হতো না কিছু, 

যদি না হতো কভু জনম আমার।

তারপরে ভালো হতো যদি জনমের পরে দেরি না করে ফিরে যেতাম আবার!

কেননা যৌবনের নেশা কেটে গেলে,  জীবন আটকে পড়ে যন্ত্রণার জালে। 

যন্ত্রণা, যন্ত্রণা কেবলই যন্ত্রণা;

এই চক্র থেকে কারোরই কি মুক্তি মেলে?"

মূল- সফোক্লিস 

অনুবাদ - শামস অর্ক


জন্ম, অর্থহীন জীবন, খাওয়া, ঘুম, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া, সেক্স, শনি-রবি-সোম গোনা,  সবুজ ঘাস, উঁচু পাহাড়,  নীল জলের সমুদ্র দেখে জীবন সুন্দর বলা, সবশেষে মৃত্যু!

এসবেরই পুণরাবৃত্তি করানোর জন্য বাবাদের ভূমিকা অপরিসীম! ( অন্তত তাদের এত মহিমান্বিত করানোর মত কিছুই না তারা) 


তারা আমাদের জন্ম দেয়, আমরা আবার সন্তানদের জন্ম দেই! চলতেই থাকে...... 

তারা যেমন আমরা না চাইতেই,  আমাদের অনুমতি না নিয়ে,  জোর করে জীবন চাপিয়ে দিয়ে, মৃত্যু অবধারিত জেনেও জন্ম দিয়ে বলে,  'দেখো!  তোমাদের কত কষ্ট করে জন্ম দিয়েছি ( কী একটা করে ফেলছে! পুরাটাই নিজেদের স্বার্থে!  নিজের জিন অমর করার তাগিদ, বৃদ্ধ বয়সের আশ্রয়)  কত্ত কষ্ট করছি তোমাদের জন্য,  আবার আমরাও জন্ম দিই এসবই বলি!

'দি মিথ অফ সিসিফাস' বইয়ের (কাম্যুর লেখা) সিসিফাসের মত করে অর্থহীন জীবনকে ভ্রমে অর্থপূর্ণ ভাবছি!  সিসিফাস যেমন দেবতাদের দ্বারা অভিশপ্ত ছিলো আমরাও তাই। 

এসবের পুণরাবৃত্তি করানোর জন্য জন্ম দেবার আগে একবার থামি,  ভাবি,  প্রশ্ন করি! 


সমাজে, বিদ্যাপীঠে, পুস্তকে মা-বাবা নিয়ে নীতিবাক্যের ছড়াছড়ির চাপে  তাদেরও যে কিছু চিন্তাধারা কিংবা সন্তান লালনের পদ্ধতির পরিমার্জন দরকার সেটা ভাবনাতেও আসেনা। 

ছাগল পালনের আগেও আমরা একটু জানি, পড়াশোনা করি ছাগল পালনের পদ্ধতি সম্পর্কে! 

সন্তান জন্ম দেবার আগে কিছু মানুষদের ঘাড় ধরে বাবা এবং মা শব্দের মানে নতুনভাবে শেখানো উচিৎ। 

যদিও  একজন নারী এবং পুরুষের শরীরের চাহিদাই এখানে মূখ্য, মা কিংবা বাবা হবার একটা গুপ্ত লালসা থাকে নারী - পুরুষের মাঝে তবুও এই কার্যকলাপের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় নতুন এক ব্যাক্তি।  যে একজন স্বতন্ত্র এবং স্বাধীন সত্তা। তাই তখন আর ব্যাপারটা দুজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলো না।


ওরিয়ানা ফাল্লাচির লেখা "লেটার টু এ চাইল্ড নেভার বর্ন" বইটা পড়ে আমি অনেকটা সময় বাকরুদ্ধ ছিলাম।

মায়ের আত্মকথা সেখানে পড়েছি আমরা কিন্তু আমি পাশাপাশি সন্তানের আত্মকথাও ভাবছিলাম।

তিনি তাঁর লেখায় সমাজকে, একজন বাবার মনস্তত্ত্বকে ফুটিয়ে তুলেছেন চমৎকারভাবে এবং মায়ের চরিত্রকে যথেষ্ট পজিটিভভাবে প্রেজেন্ট করেছেন। কিন্তু সব মা ই তাঁর লেখায় সৃষ্টি করা মায়ের মত হয় না।

এই বই দিয়ে বানানো মঞ্চ নাটকে একসময় যখন অনাগত সন্তান মাকে বলে,  " ডোন্ট ক্রাই, আই উইল বর্ন এনাদার টাইম"

তখন সে হয়ত নিজের ছোট্ট মস্তিষ্কে অনুধাবন করতে পারে না, যে যায় সে আর ফিরে আসে না। 

মৃত্যু এই আসা যাওয়া,  পৃথিবী ঘুরে বেড়াবার স্বাধীনতাকে রোধ করে দেয়।

হুমায়ুন আজাদ " আমার অবিশ্বাস" বইতে মৃত্যু প্রসঙ্গে বলেন,

"একপাশে শূণ্যতার খোলা, অন্যপাশে মৃত্যুর ঢাকনা,

প'ড়ে আছে কালো জলে নিরর্থ ঝিনুক।"


এই নিরর্থ ঝিনুকের মত করে তুমি পড়ে থাক জড়ায়ুতে।

তুমি নগ্ন পুতুল অথবা তুমি কারো স্বপ্ন পূরণের বস্তু। তোমাকে তারা আনবে, ভাংচুর করে গড়বে, নিজেদের ধর্মের পোশাক তোমার শরীরে পরাবে, নিজেদের প্রথা এবং বিশ্বাসের মানচিত্র ধরিয়ে দিবে তোমার কচি হাতে। 

সবটা মেনে নিলে তারা তোমাকে আহ্লাদিত হয়ে মুকুট পরাবে।   না মানতে পারলে বিদ্রোহী,  অবিশ্বাসী, অসামাজিক সহ আগেভাগেই বানিয়ে রাখা শব্দে তোমাকে জর্জরিত করবে।


জন্মদানবিরোধ ২


 মা-বাবার বিরুদ্ধে জন্ম দেওয়ার অপরাধে রাফায়েল স্যামুয়েল নামের ২৭ বছর বয়সী একজন যুবক মামলা করার পরিকল্পনা  করেছিলেন। 

(তার মা-বাবা দুজনই ছিলেন আইনজীবী!) 

আমি যেমন বলি,  ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমি অসুখী নই তবে জীবন অপ্রয়োজনীয়।

স্যামুয়েল তেমনি জানান,  "আমি আমার মা-বাবাকে ভালবাসি তবে মা-বাবারা নিজেদের আনন্দ এবং খুশির জন্য আমাকে জন্ম দিয়েছেন!"

'

জন্ম দেওয়ার অপরাধে মা-বাবার নৈতিকতায় প্রশ্ন তুললেই যে কথাগুলো শুনতে হয়,

১. আমার মা-বাবা তোমার মা-বাবার মত না।  (!!আচ্ছা!!)

তারা আমাকে যথেষ্ট ভালবাসেন। (!!খুবই ভালো কথা!!)

ধরে নিলাম সবার মা-বাবা (আমার বাদে) সন্তানদের ভালোবাসেন। 

কিন্তু জন্ম দিয়ে তারা নিজেরাই তো সন্তানদের নিশ্চিত মৃত্যুর জন্য দায়ী।


(সন্তানদের 'জন্ম' দেয় না বলে বলা উচিৎ  বোধহয় 'মৃত্যু' দেয়)। 

নিজের খুশি এবং আনন্দের জন্য জন্ম দেয়! 

বৃদ্ধ বয়সে ধুকে ধুকে মরার (ব্যতিক্রমী মৃত্যুর কথা আপাতত বাদ দিলাম) আশ্রয়ের জন্য জন্ম দেয়।

এবং সেই সন্তানকেও অদূর ভবিষ্যতে, বৃদ্ধ বয়সে ধুকে ধুকে মরার বন্দোবস্ত করে দিয়ে যায়।

(!!সেই কতকাল ধরে চলছেই!!)


মা-বাবা নিজের স্বার্থে (খুশি+আনন্দ+ইচ্ছা+আমাকে যেহেতু কেউ জন্ম দিয়েছে আমিও জন্ম দিবো!),

পৃথিবী অনাগতদের বসবাসযোগ্য কীনা না ভেবেই,

জন্ম দেওয়া মানে নিশ্চিত মৃত্যু এটা জানা সত্ত্বেও জন্ম দিলো আর এরপরেও নাকি বলতে হবে তারা সন্তানদের যথেষ্ট ভালবাসেন!


(আমি কাউকে চুমু খেতে খেতে বুকে চাকু বসিয়ে দিলে চুমুর দিকটা বিবেচনায় এনে কেউ নিশ্চয় চাকু মারার অপরাধ মার্জনা করবেন না!)

২.অনেকেই জীবন নিয়ে অসুখী কিন্তু অনাগতরা জীবন নিয়ে সুখী হতেও তো পারে!

'

আমি জীবন নিয়ে অসুখী হয়ে জন্মদানবিরোধী হলে তো বলতাম, যারা জীবন নিয়ে অসুখী তারা (কেবল তারাই) জন্ম দিবেন না!

জীবন নিয়ে সুখী নাকি অসুখী এর চেয়েও বড় কথা জীবনটাই অপ্রয়োজনীয় এবং নিরর্থক। 


" না ছিলাম আমি, দুনিয়া ছিলো। 

না হতাম আমি, দুনিয়া থাকতো।

ডুবালো আমায় এই অস্তিত্ব! 

না হতাম আমি, তবে কিইবা হতো!"

মির্জা গালিবের লেখা এবং শামস অর্কের অনুবাদের একটু পরিবর্তিত করে দিয়েছি) [দুনিয়ার জায়গায় খোদা ছিলো]


আপনি যদি নতুন কোথাও ট্যুর দিতে চান এবং নিশ্চিত  নন যে ট্যুরে আপনি প্রশান্তি পাবেন (পেতেও পারেন এমন সম্ভাবনা আছে তবে তা ক্ষীণ)  তবে সেক্ষেত্রে নিশ্চয় ট্যুর না দেওয়াকেই বেছে নিবেন। 

(কিছু ঘটে যাওয়ার পর আফসোস করার চেয়ে না ঘটিয়ে আফসোস করা ভালো)

যখন আপনি বলছেন, অনাগতরা জীবন নিয়ে সুখী হতেও পারে। 

তবে কি শুধু এই সম্ভাবনাকে ধরে নিয়ে জন্ম দিবেন? 


৩. তোমার কেনো মনে হয় জন্ম দেওয়া অনৈতিক?

'

তুমি বললে, তুমি ভূতে বিশ্বাস করো। তাহলে আমিই তোমাকে জিজ্ঞাসা করবো,  তুমি কেনো ভূতে বিশ্বাস করো? 

কিন্তু উল্টো যদি তুমিই আমাকে জিজ্ঞাসা করে বসো,  তুমি ভূতে কেনো বিশ্বাস করো না? (!!)

আমার প্রশ্নই বেশি যৌক্তিক নয় কি?

'তুমি কেনো মনে করো সন্তান জন্ম দেওয়া নৈতিক?'

'

৪. এভাবে সবাই যদি জন্ম দেওয়া থেকে বিরত থাকে তবে তো প্রজাতির (মনুষ্য) বিলুপ্তি ঘটবে!

শোপেনহাওয়ারের লাইন মনে পড়লো -

"হায়! সবকিছুই হারিয়ে যায়!

আর যা কিছু হারিয়ে যায়- এখন যা  আছে তা যদি পরের কোনো এক মুহূর্তে  হারিয়েই যায় স্বপ্নের মত তবে তার জন্য উদ্যোগ প্রচেষ্টাও আদতে কোনো মূল্য বহন করে না।"

আমি/আপনি মরে গেলে প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটলে / অনন্তকাল টিকে গেলেই (!!অসম্ভব) আমার /আপনার কী?! আজ না হয় কাল মনুষ্য প্রজাতির বিলুপ্তি অবশ্যম্ভাবী!


জন্মদানবিরোধ ৩


 "আমার সন্তানেরা পৃথিবীকে অধিক বাসযোগ্য  জায়গা করে তুলবে!"
লোকেরা প্রায়ই তাদের সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তকে ন্যায়সঙ্গত করতে খুশি হয়ে বলে যে, তাদের সন্তানরা একদিন বিশ্বকে আরও মানবিক স্থান করে তুলবে। 
যাইহোক, যেসকল মা-বাবা এই ধরণের কথা বলেন তাদের (অসুস্থ পৃথিবীতে নতুন শিশু জন্ম দেবার আগে) নিজেকে প্রশ্ন করা উচিৎ,
 তারা নিজেরাই এবং তাদের পূর্বপুরুষেরা কেনো বিশ্বকে বসবাস উপযোগী করতে পারেনি?
শিরোনাম - Antinatalism Manifesto 
লেখক - Karim Akerma

জন্মদানবিরোধ ৪

 'ক্যানো নিঃসন্তান থাকা?'

যদি কেউই আজকের দিন থেকে ১০০ বছর সন্তান জন্মদান না করে তাহলে:

- কোনো যুদ্ধ থাকবে না (কখনো শান্তিও থাকবে না)

- কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না (কেউ উদরপূর্তিও করবে না)

- কেউ অপমানিত হবে না ( কেউ সম্মানিতও হবে না)

- কেউ দূর্বল থাকবে না (কেউ স্বাস্থ্যবানও হবে  না)

- কেউ অত্যাচারিত হবে না ( কোনো অত্যাচারীও থাকবে না)

- কেউ অস্তিত্বের কষ্টে ভুগবে না কিংবা আর্থিক কষ্টে ভুগবে না (জীবনকে ভালোবাসার জন্যও কেউ থাকবে না)

- কোনো নার্সিং হোম থাকবে না (কোনো প্রসব বেদনাও থাকবে না)

- মৃত্যুভয় থাকবে না এবং কেউ মারাও যাবে না (কোনো নবজাতকও জন্ম নিবে না)

- কোনো গনহত্যা ঘটবে না (কোনো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও থাকবে না)

- কোনো মৃত্যুপুরী থাকবে না ( এর সাথে তুলনা করার মত কোনো শব্দ {জীবনপুরী} হতে পারে না)

 শুধুমাত্র যারা বন্ধনীতে থাকা বিষয়গুলোকে বেশি প্রাধান্য দিবে বন্ধনীর বাইরের বিষয়গুলোর চেয়ে কেবল তারাই মানব প্রজাতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চাইবে।

শিরোনাম - Antinatalism Manifesto

লেখক - Karim Akerma

"
জন্মদানবিরোধ ৫

 এটা খুবই হাস্যকর ব্যাপার যে, আপনি কারো মৃত্যুতে ব্যথিত হন এবং অশ্রুসিক্ত হন অপরদিকে কারো জন্মতে আনন্দিত হন!

অথচ দু'টো বিষই একই।

যদি কাঁদতেই চান তবে শুরুতেই কেঁদে নিন। 

কারণ, কারো জন্ম হলো মানে তার একদিন নিশ্চিত মৃত্যু হবে।

ডাক্তার যদি আপনার রোগ শনাক্ত করে বলেন, আপনি কয়েক মাসের ভিতর মরতে চলেছেন তবে আপনি ডাক্তারকে বলুন, মৃত্যু আপনার কাছেও আসছে! কে আগে এবং কে পরে যাবে এটাই কেবল পার্থক্য।

পৃথিবীর কোনো ডাক্তারই মৃত্যু নামক রোগকে আরোগ্য এবং প্রতিরোধ করতে পারে না।

(No Ajhn Chah -Reflections- বইয়ের Birth and Death অংশ থেকে মূলভাব)

বৌদ্ধদর্শন

"

জন্মদানবিরোধ ৬

 কেনো জন্মদানবিরোধের সমর্থক পাওয়া যায় না?

কারণ-

১. জন্ম দেওয়াকে মহৎ করার পেছনে যতগুলো ব্যবসা আছে সব বন্ধ হয়ে যাবে।

রাজনীতি চায় কর্মী,  কারখানা চায় শ্রমিক, ধর্মব্যবসা চায় নিজের দলভারী করতে, পুঁজিবাদ চায় ক্রেতা। 

২. মানুষ তার জীবনের যেসময় এসে উপলব্ধি  করতে পারে, সে জন্ম না নিলে / জন্ম না দিলে কিছুই যেতো আসতো না এবং মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা কতটা ভয়ংকর সেই অন্তিমসময়ে সে ইতিমধ্যে জন্ম দিয়ে ফেলেছে! 

৩. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জন্মদানের বিরোধী তেমন একটা পাওয়া যায় না। 

কারণ এখানে সরব বেশিরভাগই তরুণ প্রজন্ম।

বৃদ্ধ বয়সে কেঁপে কেঁপে যারা পা ফেলে, শরীরের সকল ইন্দ্রিয় কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, সে অন্যের জন্য বোঝা এটা উপলব্ধি করে, খাবারের তুলনায় ঔষধের পরিমাণ বেশি নিয়ে যেখানে বেঁচে থাকাই কষ্টকর সেখানে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হবে কী করে?

আর তরুণ প্রজন্মের অনেকেই জীবনযন্ত্রণা টের পেলেও সম্ভবত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে আনন্দে আছে এমনটাই দেখাতে স্বস্তিবোধ করে!

৪. মা-বাবার অধীন থাকার কারণে (অর্থনৈতিক বা অন্যান্য কারণে নির্ভরশীল) তাদের বিরুদ্ধে যায় এমন বিষয় সন্তানদের অনেকেই সহজে নিতে পারে না।

৫. শিশু বেড়েই ওঠে সেখানে যেখানে 

মা-বাবাকে পূজনীয় জায়গায় রাখা হয়!

প্রচলিত এবং সকল ধর্মেই তাদের মহৎ করে তুলে ধরা হয়। 

যে কারণে ভাবনাতেও আসে না জন্ম দেওয়ার পিছনে মা-বাবার স্বার্থ থাকতে পারে!

৬. মানুষ আশাবাদী প্রাণী। উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি আমাদের বহু বছর বাঁচিয়ে রাখবে ভাবতে ভালো লাগে। 

(অথচ অমরত্ব বা দীর্ঘদিন বাঁচাই যদি ভালো হতো তবে জাহান্নামে অনন্তকাল জ্বলতে হবে শুনলে সবাই খুশি হতো!)

জীবনের সাথে মৃত্যু অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত, মনুষ্য প্রজাতির  বিলুপ্তি অবশ্যম্ভাবী ভাবতে বোধহয় ভালো লাগে না কারোরই।

৭. প্রজাতি টিকিয়ে রাখার স্পৃহা সকল প্রাণীর মধ্যেই বিদ্যমান।

মানুষও ব্যতিক্রম না৷ অথচ এত হিংসুটে, পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর প্রাণীর অস্তিত্ব না থাকাই ভালো। 

(মানুষের জন্যও ভালো!)


#Antinatalism

#Stop_Making_Babies


জন্মদানবিরোধ ৭

জন্মদানবিরোধ নিয়ে ভুল ধারণা-

(১) - তাহলে আপনি কি শিশুদের ভালোবাসেন না?

- ভালোবাসি বলেই জন্মদানের বিরোধী আমি। একজন শিশু জন্ম নিলো মানেই পুঁজিবাদী সমাজের দাস হয়ে গেলো। প্রতিনিয়ত নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই, চাপিয়ে দেয়া দায়িত্বের বৃত্তে বন্দী হয়ে গেলো।এই বৃত্ত থেকে মুক্তির একমাত্র পথ অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু! বেশিরভাগ মানুষই শিশুদের হয়ত ভালোবাসেন৷ অথচ যারা ভালোবাসে বলেন তারাই শিশুদেরকে নিজেদের মনোরঞ্জনের জন্য, নিজের একাকিত্ব দূর করার জন্য, দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে, বৃদ্ধ বয়সে পিতা-মাতার নাতি-নাতনির মুখ দেখার শখ পূরণ করতে ব্যবহার করেন। তাহলে শিশুদের কে ভালোবাসেন? জন্মদানবিরোধীরা নাকি যারা জন্ম দেয় তারা?

(২)আপনার মা-বাবা আপনাকে জন্ম দিলো অথচ আপনি কাউকে জন্ম দিবেন না? কেউ আমাকে জন্ম দিয়েছে বলে আমারও কাউকে জন্ম দিতে হবে এমন নৈতিক বাধ্যবাধকতা নেই। জন্ম দেওয়া যদি ভালো কিছু হতোও এজন্য তো সম্মান,  কৃতজ্ঞতা এবং সেবা মাতা-পিতার পাওয়ার কথা।নতুন করে সন্তান জন্ম দিলেই কি মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ হয়?

(৩)আপনি কি অধার্মিক বলেই জন্মদানে বিরোধীতা করছেন? যদি আপনি মনে করেন সন্তান জন্ম না দেওয়া ঈশ্বরের বিরোধীতা করা তাহলে কেনো আপনি যখন সন্তান চান না তখন জন্মনিরোধক (পিল, কনডম, সিমেন বাইরে ফেলা ইত্যাদি) ব্যবস্থা গ্রহণ করেন? ধর্মবিশ্বাসটাও আপনাকে জন্মদানবিরোধী করতে পারে। অধিকাংশ প্রধান ধর্মেই স্বর্গ/নরকের কথা উল্লেখ আছে৷ আপনি যদি বিশ্বাস করেন, পরকালে পাপ-পূণ্য হিসেব করে স্বর্গ/নরকে পাঠানো হয় তাহলে নিশ্চয় চাইবেন না আপনার সন্তান নরকে যাক৷ আপনি তখন নরক থেকে বাঁচাতে জোর করে এটা করতে দিবেন না, ওটা করতে বাধ্য করবেন। যা সন্তানের উপর রীতিমতো অত্যাচার৷ অপরদিকে তাকে তার মতো ছেড়ে দিলেও হয়ত আপনার ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী এমন কিছু করবে যা  তাকে নরকবাসী করবে। সন্তানকে কতদিন আগলে রাখতে পারবেন? মৃত্যুর পরেও?

(ইসলাম ধর্মমতে, সন্তান যদি পাপ করে তবে তার শাস্তি আপনিও পাবেন। এ ভয়ে আপনি নিজেকে এবং সন্তানকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাতে নানা কঠোর কষ্টদায়ক বিধিনিষেধ সন্তানের উপর চাপিয়ে দেন। তবুও সন্তান ধর্মীয় দৃষ্টিতে বিপথে যেতে পারে। যার দায় স্রষ্টার কাছে আপনি এড়াতে পারবেন না৷)

(৪)আপনি কি জীবন নিয়ে অসুখী বলে জন্মদানবিরোধী? আপনার দৃষ্টিতে সবচেয়ে সুখী মানুষের কথা কল্পনা করুন। *তিনি কি জীবনে কখনো প্রিয়জন হারাননি?

*তিনি কখনোই রোগে ভোগেননি?

*তিনি কি চেয়ে না পাওয়ার যন্ত্রণা পাননি?

*সমাজ, পরিবার, দায়িত্বের বৃত্তে কখনো বন্দী অনুভব করেননি?

*তিনি কি কখনোই জীবনের বেড়াজাল থেকে পালাতে চাননি?

*তিনি কি তার জীবনে কখনোই হতাশাগ্রস্ত হননি?*মৃত্যুভয় কি কখনোই তাকে উৎকন্ঠিত করেনি?*প্রিয়জনদের থেকে কি তিনি কখনোই কষ্ট পাননি?*তিনি কি কখনো সবার মাঝে থেকেও একা অনুভব করার যন্ত্রণায় ভোগেন নি?

যদি এসবের মধ্য দিয়ে তাকে প্রতিনিয়ত  যেতে হয় তবে কি আপনি তাকে সুখী মানুষ বলবেন?ধরুন,  জন্ম নেওয়ার আগে অনুমতি নেওয়ার অপশন থাকতো আর তাকে (আপনার দৃষ্টিতে সুখী মানুষকে) বলা হতো জন্ম নিলে জীবদ্দশায় এসবের সম্মুখীন হতে হবে এবং জন্ম না নিলে এসবের মধ্য দিয়ে যেতে হবে না তখন সে কোন অপশন বেছে নিতো বলে আপনি মনে করেন?

(৫)মানুষ জন্ম না নিলে পৃথিবী টিকবে কী করে?

মানুষ কি পৃথিবী সৃষ্টির আগে থেকেই ছিলো?

এককোটি বছর আগে তো মানুষ ছিলো না তখন কি পৃথিবী টেকে নি?টিকে থাকা বলতে যদি পৃথিবীর পরিবেশ ভালো থাকা বোঝেন তাহলে তো মানুষই উল্টো পৃথিবীর পরিবেশ দূষিত করছে। 

আপনার মতে, মানুষ তাহলে কিভাবে পৃথিবী টিকিয়ে রাখছে?!

#Antinatalism

"

জন্মদানবিরোধ ৮

 *যখন কোনো মুভি দেখি তখন আমরা নিজেকে প্রশ্ন করি,  'এই মুভিটা আমি অন্য কাউকে দেখার জন্য বলতে পারি কিনা।

তেমনি আপনার এবং অন্যদের জীবন পর্যবেক্ষণ করে নিজেকে প্রশ্ন করুন, জীবন অন্যকে রিকমেন্ড করতে (কাউকে জীবন বা জন্ম দিতে) পারেন কিনা।


* সমাজ এবং পারিপার্শ্বিকতা আমাদের উপর পিতৃত্ব বা মাতৃত্বকে চাপিয়ে দেয়৷ 

তারা মনে করে সন্তান না নিলে আমরা স্বাভাবিক না। 


* মানুষ পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট প্রজাতি৷ 

আমরা পৃথিবীর কোনো উপকারেই আসি না বরং ক্ষতিই করি। 


*আমার মনে হয়, জীবন এমনিতেই সহজ না, কঠিন এক সংগ্রাম। 

আমি নতুন একটা প্রাণকে এই সংগ্রামের জীবনে আনবো না। 


*  আপনি যদি মনে করে থাকেন, জন্ম-মৃত্যু প্রকৃতির খেলা এবং এখানে কেবলমাত্র আমরা খেলার অংশ।  জীবন খারাপ হোক বা খারাপ ভালোর মিশ্রণ হোক একদিন তো মরেই যাবেন।

তাহলে রেজাল্টটা কী দাঁড়ালো? যা কিছু হারিয়েই যায়, শেষ হয়েই যায় তা থাকা না থাকা তো কোনো মূল্য বহন করে না। 


*আমরা বড়জোর সুখী হওয়ার চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু সুখ ক্ষণস্থায়ী। ক্রনিক হ্যাপিনেস (দীর্ঘস্থায়ী সুখ)  নাই কিন্তু ক্রনিক পেইন  (দীর্ঘস্থায়ী দুঃখ) আছে।


* এই বিধ্বস্ত পৃথিবীকে ঠিক (সুস্থ) করার জন্য নতুন কাউকে আনা নৈতিকভাবে যৌক্তিক  না। 


* আমি বলবো না,  জীবন নিয়ে আমি হতাশ তবে জীবন অপ্রয়োজনীয়। 

কোনো কারণ নাই আমার এখানে থাকার। 

কেবলমাত্র মা-বাবার সিদ্ধান্তের জন্য আমি এখানে। 


* আমার সমস্যা নেই যদি কেউ আমাকে আমার সিদ্ধান্ত শুনে হতাশাবাদী বলে৷ আমি মনে করি, আমি আসলে বাস্তববাদী । 


*বাচ্চা না নেওয়া সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব সিদ্ধান্ত হবে৷ কারণ আমার পরে কার্বন নিঃসরণ করার মতো কেউ থাকবে না৷


(ইন্ডিয়ান এন্টিন্যাটালিস্টদের একটা প্রতিবেদন থেকে মূলভাব সংগৃহীত)

#বিভিন্ন বইয়ের অংশ থেকে অনুবাদ - ১

"আমার সবসময় এমন যুক্তি ছিলো যে,  প্রকৃতির একটি মহা পরিকল্পনা আছে যা প্রতিটি প্রজাতিকে বংশবৃদ্ধির দিকে ঠেলে দেয় এবং প্রকৃতির এই স্বেচ্ছাচারিতাকে অস্বীকার করা যুক্তিবাদী মানুষ হিসেবে এটা আমাদের অধিকার এমনকি বাধ্যবাধকতাও। প্রকৃতি নিজেই গণহত্যাকারী, নিষ্ঠুর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে হাজার হাজার প্রাণী হত্যার মাধ্যমে একজনকে বাঁচিয়ে রাখে।"

মূল- Camille পাগ্লিয়া


#বিভিন্ন বইয়ের অংশ থেকে অনুবাদ - ২

"স্বর্গ এবং সুখের অস্তিত্ব নেই।

আপনাকে এই পৃথিবীতে আনার অপরাধকে ন্যায়সঙ্গত করতেই আপনার মা-বাবা এগুলোকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। যা আছে তা হলো বাস্তবতা, কঠিন বাস্তবতা! এই কসাইখানায় আমরা মরতে এসেছি, যতদিন না মরি ততদিন আমাদের অধীনস্থ প্রাণীদের হত্যা করে খেয়ে বাঁচতে হবে।

সুতরাং, জন্ম দিবেন না । যে অন্যায় আপনার সাথে করা হয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি করবেন না । অন্যায়ের জবাব অন্যায় করে দিবেন না, যেহেতু জীবন দেওয়া চরমতম অন্যায় । যারা জন্ম নেয়নি তাদের শান্তিভঙ্গ করবেন না, তাদেরকে অস্তিত্বহীনতার শান্তিতে থাকতে দিন । আমাদের সবাইকে একদিন সেই অস্তিত্বহীনতায় ফিরে যেতেই হবে, তাহলে কেন শুধুশুধু কাউকে অস্তিত্বের যন্ত্রণা দেওয়া ?

(মূল - FERNANDO  VALLEJO)

#বিভিন্ন বইয়ের অংশ থেকে অনুবাদ - ৩

মানুষের দুর্দশা এবং পশুদের দুর্দশা পুরোপুরি (সংবেদনশীলতার দিক থেকে) আলাদা নয়। অন্যান্য প্রাণীরাও মানুষের মতোই দুর্ভোগ পোহায় এবং তারাও মারা যায়। 

প্রশ্ন থাকতে পারে, তাদের জীবনের আসলে অর্থ কী?

বেশিরভাগ মানুষ (যারা নিজের জীবনের অর্থ এবং প্রাণীর জীবনের কষ্ট নিয়ে চিন্তা করে) তারাও প্রাণীদের জীবনের অর্থ নিয়ে কমই চিন্তিত হন।

আমি বলতে চাচ্ছি না যে, কেবল আমরাই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আছি। আমাদের দুর্দশার অনেক বৈশিষ্ট্য অন্যান্য প্রাণীদের সাথে মেলানো যায়; যাদের সাথে আমরা একটি বিবর্তনীয় ইতিহাস ভাগ করি।

প্রকৃতপক্ষে, অনেক প্রজাতির প্রাণী রয়েছে যাদের দুর্দশা অনেক দিক থেকে মানুষের দুর্দশার চেয়েও খারাপ।

মুরগির জীবন ভেবে দেখি-

বেশিরভাগ পুরুষ ছানা ডিম উৎপাদন শিল্পে ভূমিকা রাখতে পারে না বলে ডিম ফোটার এক বা দুই দিনের মধ্যে মেরে ফেলা হয়।

অন্যান্য মুরগি অবশ্য একটু বেশিদিন বাঁচে তবে এটা তাদের কষ্টকে দীর্ঘায়িত করে।

ব্রয়লার মুরগি তাড়াতাড়ি মোটাতাজা হয় এবং প্রায় দুই মাসের মধ্যে জবাই করার উপযোগী হয়। ডিমপাড়া মুরগির আয়ুষ্কাল পরিমাপ করা হয় বছরে। ব্রয়লার মুরগির সাথে ডিমপাড়া মুরগির জীবনের তফাৎ কেবল দুই মাসের জায়গায় দুই বছর কিন্তু অধিকাংশই যে অবস্থাতে বাস করে তা ভয়াবহ।

তাদের জীবন কদর্য, নৃশংস এবং সংক্ষিপ্ত তবে অবশ্যই একাকী নয় বরং তারা অত্যন্ত জনাকীর্ণভাবে বাস করতে বাধ্য হয় যার ফলে তাদের মানসিক কষ্ট এবং শারীরিক সমস্যা হয়।

বই - The Human Predicament 

লেখক - ডেভিড বেনাটার

"

#এন্টিন্যাটালিজমের সাথে সম্পর্কযুক্ত করা যায় এমন কবিতা অনুবাদ- ১

যেহেতু দুঃখের এই দুনিয়ায়
যন্ত্রণা সবাই পায়,
সেহেতু সুখী তারা
পৃথিবীতে আসেনি যারা!
এরপর সুখী তারা
এসেই দেরি না করে চলে যায় যারা!

(রুবাইয়াৎ- ই ওমর খৈয়াম থেকে)
#এন্টিন্যাটালিজমের সাথে সম্পর্কযুক্ত করা যায় এমন কবিতা - ২
আমাদের জীবন ক্ষণস্থায়ী 
শীঘ্রই তা শেষ হয়ে যাবে। 
মৃত্যু দ্রুত আসে 
আমাদের নিষ্ঠুরভাবে ছিনিয়ে নেয়
মৃত্যু কাউকে রেহাই দেয় না।
(De Brevitate vitae এর Death কবিতা থেকে)
#এন্টিন্যাটালিজমের সাথে সম্পর্কযুক্ত করা যায় এমন গান অনুবাদ - ১

হয় বলে দাও আমরা মানুষ নই,

না-হয় মেনে নাও তুমি ভগবান নও।
'
নিজেদের ইচ্ছেতে আমরা আসিনি তো,
তুমিই আমাদের দুনিয়াতে এনেছো।
তবে কেনো তুমি আমাদের করুণা করো নাকো?
'
ঘাবড়ে গিয়ে কখনো মনে হয়,
মরে গেলেই বরং ভালো হয়।
মৃত্যুও তোমার হাতেই,
আবার বেঁচে থাকাও তো সহজ নয়! 
'
হয় বলে দাও আমরা মানুষ নই,
না-হয় মেনে নাও তুমি ভগবান নও।

Movie: CHHAYA (1961)
Singer: Mohammed Rafi
Lyrics: Rajinder Krishan 
Music: Salil Chaudhary

https://youtu.be/ntolA3J1xDI
#এন্টিন্যাটালিজমের সাথে সম্পর্কযুক্ত করা যায় এমন গান অনুবাদ - ২

মহল, সিংহাসন, মুকুটের (ক্ষমতাবানদের) এই দুনিয়া,

মানুষের শত্রু সমাজের এই দুনিয়া,

সম্পদের দিকে মুখিয়ে থাকার স্বভাব এই দুনিয়ার।

এই দুনিয়া পেয়ে গেলেই বা কী হবে?


প্রতিটা শরীরই বিধ্বস্ত, প্রতিটি হৃদয়ই তৃষ্ণার্ত।

চোখেতে বিভ্রান্তি, হৃদয়ে বিষাদ!

এটা কি দুনিয়া নাকি অন্য কিছু?

এই দুনিয়া পেয়ে গেলেই বা কী হবে?


এখানে মানুষের অস্তিত্ব খেলনা,

মৃতদের পূজারক এই দুনিয়া! 

(সকল পূজা, মূর্তি,  অশ্রু মৃতদের জন্য)

এখানে জীবনের চেয়ে মৃত্যু সস্তা। 

এই দুনিয়া পেয়ে গেলেই বা কী হবে?


যুবকরা অতৃপ্ত আত্মার মত ছোটাছুটি করে পাপের অলিগলিতে।

যুবতীরা নিজেকে সাজায় বাজারে পণ্য করতে!

যেখানে প্রেম-ভালোবাসা কেবলই লেনদেন।

এই দুনিয়া পেয়ে গেলেই বা কী হবে?


এটা এমনই এক দুনিয়া যেখানে মানুষের মূল্য নেই,

ভরসা বলতে কিছু নেই,

বন্ধুত্ব বলতে কিছু নেই!

যেখানে ভালোবাসার কোনো মূল্যই নেই।

এই দুনিয়া পেয়ে গেলেই বা কী হবে?


জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও এই পৃথিবী

আমার সামনে থেকে সরাও এই পৃথিবী

তোমাদের পৃথিবীতে তোমরাই থাকো।

(লেখা- শাহির লুধিয়ানভি

মূল- উর্দু) 

'

'অস্তিত্বহীনতার শান্তি' বইটি বিনামূল্যে পড়তে-

  




অথবা
অথবা



অথবা




অথবা





মন্তব্যসমূহ

Sohag Mia বলেছেন…
ভালো লেগেছে আপু৷ সুন্দর উপস্থাপনা৷
জ্যোতি বলেছেন…
পাঠ এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কাফকার মেটামরফোসিস

জন্মদানবিরোধ সব পর্ব একত্রে (শামস অর্ক)