পোস্টগুলি

জুন, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

লেখার অক্ষরে বকে যাওয়া

ছবি
 চিঠি সম্পর্কে  রবীন্দ্রনাথ বলেন, 'চিঠি হচ্ছে লেখার অক্ষরে বকে যাওয়া'!  এখনকার সময়ে বকে যাওয়ার জন্য লেখার অক্ষর খুব ধীরগতির প্রক্রিয়া তাই সামনাসামনি হয়ে অথবা ফোন করে সবাই বকে যায়। এত সময় কই এখন সবার?!  চিঠি লিখে অনেকে প্রেম করতেন আগে। সবাই ঘুমানোর পর চুপিচুপি লিখে চিপায় চুপায় লুকিয়ে ফেলা! কিংবা চোখের পানিতে ভেজা চিঠির ছড়িয়ে পড়া কালির অক্ষর অস্পষ্ট  হওয়া সবই এখন অতীত।  এই যে চিঠি পেতে কালবিলম্ব হওয়াতে যে ছটফটানি তাতে কিন্তু ভালোবাসা কমতো না মোটেই ।   একটা সিনেমা দেখলাম। "দ্য জাপানিজ ওয়াইফ"। বাংলা, ইংরেজি কিংবা জাপানিজ ভাষার যেটাতে সিনেমাটি দেখতে আরাম বোধ করবেন সেটাতেই দেখতে পারেন।  দেখানো হয়েছে চিঠি লিখে প্রেম এবং চিঠি লিখে সংসার! চিঠি লিখেও সংসার হয় নাকি! পাশাপাশি থেকে একে অপরের নিঃশ্বাসের শব্দ না শুনে সংসার! সিনেমাটির বিশেষত্ব নির্মাতা অপর্ণা সেন এখানেই তুলে ধরেন। " আমার মনে আছে, আমি তখন বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে প্লে'তে পড়ি। সেসময় থেকেই গোটা গোটা ইয়া বড় অক্ষরে গ্রামে নানীর বাড়ি চিঠি লিখতাম। সেসময় থেকেই শুরু চিঠি লেখা।  শেষ লিখেছি নজরুলের "বাঁধন হারা&q

নগ্ন আঁচিল ইঁদুর

ছবি
দৃশ্য-১ মালতী টলতে টলতে উঠে দাঁড়ায়। নিজের স্তনজোড়া দু'হাত দিয়ে যদ্দুর সম্ভব চেপে ধরে এমনভাবে আড়াল করার চেষ্টা করে এ যেনো স্তন নয়, ফুলে ফেপে ওঠা কোনো আগ্নেয়গিরি। বেমালুম পড়ে আছে ভাঙচুর করা ঘরের প্রতিটা আসবাব। সিসির টুকরোর উপর গড়াগড়ি খায় খানিকটা তুসকা সিরাপ, পাশেই পড়ে আছে টেনে টেনে শ্বাস নেবার জন্য বাবার পুরোনো সেই বেকোস্প্রে, রোদে শুকাতে থাকে গত মাসের নারিকেলের খোলে জমা পানি, ভায়োলিন বাজায় কোনো বারো বছরের  কিশোরী। এখানে না,  আশেপাশেও না,  আসমানের নিচে কোথাও না কোথাও! বৈষ্ণব পদাবলির সুস্থ অংশ পাশ কাটিয়ে মালতী খুঁজতে থাকে মাকে৷ আগুনে ঝলসে যাওয়া শরীরগুলো পড়ে আছে হেয়ালিভাবে।  চেনার কোনো বৈশিষ্ট্য নেই পোড়া মুখগুলোতে তবুও হাতড়ে খুঁজে নেয়। মুখের উপর ঝুকে সাবধানে কাঁদতে থাকে।  চোখের নোনতা পানি পোড়া চামড়ায় পড়লে যে জ্বালাপোড়া করবে! মালতীর দ্য লাস্ট গার্ল বইটার কথা মনে পড়ে। আইসিসরা যেভাবে কুর্দিদ ভাষাভাষী সকল ইয়াজিদিদের উপর ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছিলো,  নাদিয়া মুরাদকে যৌন উত্তেজক পোশাক পরিয়ে ডার্টি নন বিলিভার বলে সম্বোধন করতো।  পাশাপাশি তারা নামমাত্র মূল্যে যুদ্ধবন্দী নারীদের কেনাবেচা করতো। এত

শাদা-কালো

লিও টলস্টয়ের "তিনটি প্রশ্ন" গল্পে রাজার মত করে আপনাদের আমি তিনটি প্রশ্ন করি - যখন আমরা কোনো ব্যক্তিকে বলি, সে আস্ত একটা শয়তান অথবা সাক্ষাৎ দেবতা তখন সেই ব্যক্তির মাঝে কতটা শয়তানি থাকলে তাকে শয়তান বলি অথবা কতটা ভালো মানুষ হলে তাকে দেবতা সম্বোধন করি? কাউকে দেখে আমরা যখন তাকে কালো বা শাদা বলি তখন সেই ব্যক্তি আসলে কতটা কালো বা শাদা?  যখন একটা সিনেমায় থাকা নায়ককে দেখি সুদর্শন তখন তার সবটাই ভালো দেখি। বাস্তবে এমন আগাগোড়া ভালো কোনো মানুষ দেখি? যখন সিনেমায় ভিলেনকে দেখি কিম্ভূতকিমাকার তখন তার সব কিছুই দেখানো হয় মন্দ।  বাস্তবে কোনো মানুষ কি এতটাই আগাগোড়া মন্দ হতে পারে?  কেউ আগাগোড়া ভালো এবং আগাগোড়া মন্দ হতে পারে না।  " কেউ হয়ত একবাক্যে হুমায়ূন আহমেদকে বাজারি লেখক বলবে আবার কেউ তার অন্ধ ভক্ত হতে পারে।  যে হুমায়ূন আহমেদকে বাজারি লেখক ভাবে তার নজরে লেখকের ভালো লেখা পড়ে না এবং যে অন্ধ ভক্ত সে হুমায়ূন আহমেদ যাই লিখুক না কেনো সব লেখাতেই চমকপ্রদ হয়। আমাদের একচক্ষু ভাবের জন্যই হয়ত সিনেমায় ভিলেন দেখতে  কিম্ভূতকিমাকার হয়, যে মানুষের ক্ষতি করে,  যে মেয়েদের সাথে অশালীন আচরণ করে। এক কথায় সে হব

অসামাজিক

 সমাজকে বদলাতে পারিনা বলেই নিজেকে অসামাজিক পরিচয় দেই।   প্রতিদিন ঠোক্কর খেতে খেতে শিখলাম সমাজকে বদলাবার চেয়ে অসামাজিক হওয়া সহজ।  যেমনিভাবে মাথা ব্যাথা করলে সমাজ আমাকে শেখালো মাথা কেটে ফেলাই সহজ পথ। তখন থেকে কাটতে কাটতে আমার শরীরেই কিছুই আর অবশিষ্ট রইলো না।  কেবল কোনো রকম লিকলিকে অস্তিত্ব আমার টিকে আছে কাটাতারে ঝুলে। পাড়ার ছেলেরা যখন আমার ঘরের জানালার পাশে এসে উল্লাস করেছিল তখন বাবা সহজভাবে বললেন, ঘর বদলাও! সেদিন চুপ থেকে শিখে নিলাম, গলা না টিপে ধরেও কিভাবে জবান বন্ধ করে দিতে হয়!  আমরা বিকল্প পথ খুঁজি, যে পথ ধরে নির্ভেজালভাবে জীবনটাকে দেওয়া যায়।  কিন্তু ভুলে যাই, যে পাপ গুলো আমরা জন্ম দেই প্রতিদিন জীবনকে সহজ করার নামে সেই পাপ আমাদের ছাড়তে পারে না, ছাড়েও না।  আমরা একটা মেয়ের শ্লীলতাহানি দেখে চুপ থাকি এই ভয়ে যে, কথা বললে যদি আমাকেও শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয়!  কিন্তু আমরা পাশাপাশি এটা কেনো ভাবি না,  যে মেয়ের কথা ফোটেনি তাকেও কেনো তারা বাদ দেয় না? চুপ থাকলাম আর বেঁচে গেলাম এমন ভাবা চোখ বুজে থেকে কিছু দেখিনি মানে কিছু ঘটেওনি ভাবার মত ।  আমি একা সমাজকে বদলাতে পারি না। সেই আর্তনাদেই চিৎকার করে