দোয়াতের নিচের আন্ধার

 



আমরা বাবা দিবসে বাবাকে ভালোবাসি তা জনসম্মুখে প্রকাশের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেছে নেই।

মা দিবস, শিক্ষক দিবস,  স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসসহ আরো যত দিবস আছে আমরা সেই দিবসের প্রতি গভীর সম্মান রেখে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করি এবং তা যতটা সম্ভব পজিটিভ। 

কিন্তু আমরা জানি দুনিয়াতে খারাপ বাবাও থাকতে পারে, খারাপ মায়ের খবরও সংবাদ মাধ্যমে হামেশাই চোখে পড়ে,  খারাপ শিক্ষকের কথাও জানি আমরা তবে তা নিয়ে তেমন একটা কথা বলি না কেউ। 

আমাদের নজরে আসে সুন্দর আলোকিত বিষয়।  আমরা অন্ধকারে তাকাতে ভয় পাই। কেউ যদি সাহস করে বলেই ফেলি তখন এমন বক্তব্য আমরা পেশ করি - ঘরের কথা ঘরেই রাখুন, এসব এখানে না বলাই উচিৎ । 

কেনো?

যদি ধর্ম পালনের স্বাধীনতা থাকে তবে পাশাপাশি ধর্ম পালন না করারও স্বাধীনতা থাকা উচিৎ । যদি আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কারো প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে পারি তাহলে মুদ্রার আরেকপিঠ  নিয়ে কেনো কথা বলতে পারবো না? 

যদি মনে করেন এসমস্ত বিষয় এসব সাইটে না বলা উচিৎ  তবে সেই ব্যক্তিরই প্রশংসাসূচক বাক্য বলার স্বাধীনতা কেনো থাকবে? 


একটা বিষয় দেখলাম, হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে অনেকেই ভালো ভালো কথা লিখেছেন। কেউ কেউ অবশ্য বিপরীত দিকটা নিয়ে কথা বলেছেন। 

এক্ষেত্রে যদি কেউ বলেন, আজকে ওনার জন্ম তারিখ অথবা মৃত্যু তারিখ৷ আজকেই কেনো এসব কথা তুলতে হবে? 

তাহলে আপনি শুনুন ,  যদি তাকে নিয়ে আপনি ভালো ভালো কথা বলার জন্য এই দিনটাকেই বেছে নিতে পারেন তাহলে অন্য কেউ বিপরীত দিকটা তুলে ধরার জন্যও এই দিনটা বেছে নিতে পারেন।

আপনি যদি মনে করেন,  হুমায়ূন আহমেদের লেখা নিয়ে সমালোচনা করতে নিজের তার সমান বা কাছাকাছি  পাঠক বানিয়ে তারপর মুখ খুলতে হবে তাহলে শুনুন, আপনি যদি দেশের সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেন ( আপনি যে রাজনৈতিক  দলই সাপোর্ট  করেন না কেন সেই দল বাদে তো বাকি আরো অনেক দল সাপোর্ট  করছেন না। আপনার সাপোর্ট করা দলটা না এসে অন্য দল ক্ষমতায় এলে যখন বলেন, দেশটা রসাতলে গেলো।) তখন আপনি নিজেও কি জীবনের কোনোবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় এসেছিলেন? 

কাঁঠাল, কলা নিয়ে সমালোচনা  করার আগে নিজে আগে কলা বা কাঁঠাল হন ?  

যখন বলেন গরু দুধ দেয় কম বা মুরগী ডিম দেয় ছোট তখন কি আপনি আগে বেশি দুধ দিয়ে অথবা বড় ডিম পেড়ে দেখান?

দেখান না!


একটা বৃহৎ অংশ যখন আলোকিত অংশ নিয়ে কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা তোলে তখন হাতে গোনা কয়েক জন যদি বিপরীত সাইট নিয়ে কথা বলে তখন জ্বলে যাবার কারণ কী? 

সংখ্যাগরিষ্ঠ তো আপনাদেরই। 

তবুও জ্বলেন কারণ আপনারা নিজেরাও জানেন কোনটা বেশি পোক্ত। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কাফকার মেটামরফোসিস

ঈশ্বরের সাথে বিদ্রোহ

জন্মদানবিরোধ সব পর্ব একত্রে (শামস অর্ক)