অনেকের মত আমারও ইচ্ছে হয় সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে কোথাও চলে যেতে। প্রচন্ড বৈদ্যুতিক ছুতার কবিতার মত বলতে ইচ্ছা হয়, সাহিত্য-ফাহিত্য লাথি মেরে চলে যাবো শুভা! কিন্তু পারি না। একই সাথে যদি থাকতে এবং চলে যেতে পারতাম! আমরা অনেক সময় বলি, আমি স্বাধীন এবং যখন যা মন চায় তাই করি। কিন্তু আমি একই সাথে কোথাও যাবো আবার এখানেই থাকবো এমনটা করতে পারবো? কিছু খাবো আবার খাবো না একই সাথে? কিংবা এই বইটা পড়বো আবার পড়বো না? আসলে সব কিছুরই সীমাবদ্ধতা আছে। স্রষ্টা সব পারেন যদি ধরে নেই তবুও তিনি এমন কিছু সৃষ্টি করতে পারেন না যা তিনি নিজে ধ্বংস করতে পারবেন না! এই সীমাবদ্ধতার বেড়াজালে আমার আর হারিয়ে যাওয়া হয়না। যদিও মুখে বলি, কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা। সমাজ, পরিবার, ধর্মের বেড়াজাল থেকে পালাতে যেয়ে স্বপ্নে কখনো আরশোলা কিংবা গুবরেপোকা হয়ে যাই! যেখানে আমি থাকি অস্তিত্ব এবং অনস্তিত্বের মাঝামাঝি! কাফকার মেটামরফোসিসের গ্রেগর স্যামসার মত ছটফট করতে থাকি। কিন্তু বেমালুম নাই হয়ে যাই সবার মাঝখান থেকে। আমার শূন্যতা কিছুটা খালি তো করবেই তবুও তা কতদিন? শোক, আহাজারি কতদিন স্থায়ী হয়? লেখক পেরোগ্রিনোসে প্রথম বই লেখ
জন্মদানবিরোধ ১ বাবার সাথে ঈশ্বরের (ধর্মগ্রন্থগুলোর কল্পিত ঈশ্বর) বড় মিলটা হলো - ঈশ্বর আমাদের (আমরা না চাইতেই, নিজের খেয়াল খুশিমত) সৃষ্টি করে নিজেকে বিশাল কিছু ভাবে। তেমনি বাবারাও জন্ম দিয়ে ভাবে, কী একটা মহিমান্বিত কাজ করে ফেলেছে! "এরচেয়ে ভালো হতো না কিছু, যদি না হতো কভু জনম আমার। তারপরে ভালো হতো যদি জনমের পরে দেরি না করে ফিরে যেতাম আবার! কেননা যৌবনের নেশা কেটে গেলে, জীবন আটকে পড়ে যন্ত্রণার জালে। যন্ত্রণা, যন্ত্রণা কেবলই যন্ত্রণা; এই চক্র থেকে কারোরই কি মুক্তি মেলে?" মূল- সফোক্লিস অনুবাদ - শামস অর্ক জন্ম, অর্থহীন জীবন, খাওয়া, ঘুম, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া, সেক্স, শনি-রবি-সোম গোনা, সবুজ ঘাস, উঁচু পাহাড়, নীল জলের সমুদ্র দেখে জীবন সুন্দর বলা, সবশেষে মৃত্যু! এসবেরই পুণরাবৃত্তি করানোর জন্য বাবাদের ভূমিকা অপরিসীম! ( অন্তত তাদের এত মহিমান্বিত করানোর মত কিছুই না তারা) তারা আমাদের জন্ম দেয়, আমরা আবার সন্তানদের জন্ম দেই! চলতেই থাকে...... তারা যেমন আমরা না চাইতেই, আমাদের অনুমতি না নিয়ে, জোর করে জীবন চাপিয়ে দিয়ে, মৃত্যু অবধারিত জেনেও জন্ম দিয়ে বলে, 'দেখো! তোমাদের কত কষ্ট ক
জন্মদানবিরোধ - ১ . (সিরিয়ার বিখ্যাত কবি ও মুক্তচিন্তক 'আবু আল আ'লা আল মা'রি'র কবরে স্বরচিত বাক্যে লেখা সমাধিলিপি!) . সমাধালিপিটিতে লেখা আছে, هذا جَنَاهُ أبي عليَّ وَمَا جَنَيتُ عَلَى أَحَدِ যার অর্থ হচ্ছে, 'এই অপরাধ (জন্ম দেয়ার) আমার বাবা আমার প্রতি করেছিল, কিন্তু আমি কারো প্রতিই করিনি(কাউকে জন্ম দিইনি)! . আরবের কবিতা ও মুক্তচিন্তার ইতিহাস যারা জানেন তাদের কাছে 'আল মা'রি'কে নতুন করে পরিচয় করাতে হবে না। কিন্তু এ লেখায় আলোচ্য কেবল তার 'জন্মদানবিরোধ'! আবু আল মা'রি মনে করতেন জীবনের দুঃসহ যন্ত্রণা এড়াতে সন্তান জন্মদান করা উচিত নয়। তাঁর সমাধিলিপির কথাগুলোতে মনে হতে পারে তিনি বাবার প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন, কিন্তু তা মোটেও নয়। তাঁর বাবার মৃত্যুতে শোকাহত কবি রচিত শোক-কবিতা বাবার প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ। তাই তার সমাধিলিপির মূল বক্তব্য আসলে, 'সন্তানকে যন্ত্রণার জীবন দেয়া অপরাধ, অনৈতিক।' ব্যক্তিগত জীবন ও লেখায় নৈতিকতা ও যুক্তিকে প্রাধান্য দেয়া, নির্লোভ (তাঁর কবিতা বিক্রি করে ধনী হতে নারাজ ছিলেন) চিরকুমার এই কবির ভাষায় তাঁর জীবনের দুটি বন্দিশাল
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন